Friday 26 September 2014

বানান ভুল : অবিশ্বাস্য, অসহনীয় / ড. মোহাম্মদ আমীন

ভুলের কবলে বাংলা বানান : এ লজ্জা রাখি কোথায়

হোমিও দর্পণ, রেজিস্টার্ড নম্বর : ডিএ -৬৬৬, একটি মাসিক ম্যাগাজিন। এ ম্যাগাজিনের
চিত্র নম্বর -১
সেপ্টেম্বর ২০১৪ সংখ্যার সম্পাদকীয় দেখুন (চিত্র নম্বর ১)। তিনি একজন হোমিওপ্যাথ ডাক্তার। বাংলা বানান বিষয়ে একজন শিক্ষিত মানুষের এমন অবহেলা ও অজ্ঞতা কি মেনে নেওয়া যায়? ভুল ধরে কাউকে হেয় করার জন্য নয়, বরং বানান ও শব্দচয়নে ভুল ও বিভ্রাটসমূহ তুলে ধরে ‘হোমিও দর্পণ’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক সাহেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। যাতে ভবিষ্যতে এত ভুল আর না হয় সে বিষয়ে সজাগ করাই লেখাটির উদ্দেশ্য। আশা করি বিষয়টি তারা দেখবেন। মাতৃভাষা মায়ের মতো। মায়ের প্রতি এমন অবহেলা চরম লজ্জাকর।

এবার ‘সম্পাদকীয়’ শিরোনামের লেখার ভুলগুলো বিশ্লেষণ করা যাক। প্রথম লাইনে ‘কি’ এর স্থলে হবে কী। স্বাধীনতা উত্তর শুদ্ধ নয়, হবে স্বাধীন-উত্তর, স্বাধীনোত্তর, ম্রিয়মান বানানে মূর্ধন্য-ণ হবে। ‘ম্রিয়মাণ’ শব্দের পর লেখা পুরো বাক্যটি সংশয়াবৃত এবং সুনির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশে ব্যর্থ। দ্বিতীয় অনুচ্ছেদের প্রথম ভুল ‘এতকিছু’; মূলত এমন কোন শব্দ বাংলা ভাষায় নেই, হবে ‘এত কিছু’। ‘ধারার’ স্থলে হবে ধারায়, সর্বশেষ নয়; শেষ অথবা হালনাগাদ, সরকারী নয়, সরকারি; ‘অতিসম্প্রতি’ প্রমিত নয়,
চিত্র নম্বর২
হবে সম্প্রতি। ‘উল্লেখযোগ্য’ নামের কোন পদ বাংলাদেশে এখনও সৃজন করা হয়নি। সম্পাদক সাহেব সম্ভবত ‘উল্লেখযোগ্য পদে’ বাগ্‌ভঙ্গি দিয়ে ‘উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পদে’ প্রকাশ করতে চেয়েছেন। নিসন্দেহে শব্দটি উদ্ভট, এর ঠিক বানান হচ্ছে ‘নিঃসন্দেহে’। ‘হোমিও বান্ধব’ সমাসবদ্ধ পদ। তাই ি‘হোমিওবান্ধব’ হবে। একথার> এ কথার, রেজিস্টার সহ> রেজিস্ট্রারসহ। ‘সমস্ত’ পদটি অতিরিক্ত, একই বাক্যে একই বিষয়ে একই উদ্দেশ্যে প্রকাশে দুটো বহুবচনবাচক পদ নিষ্প্রয়োজন। ‘মেজিক্যাল অফিসারবৃন্দ’ নয়, হবে ‘মেক্যিাল অফিসার বৃন্দ’। এ অনু্েচ্ছেদে আরও কিছু ভুল দেখুন : বিষয় ভিত্তিক>বিষয়ভিত্তিক, স্বার্থক>সার্থক, তাছাড়া>তা ছাড়া; ডিগ্রীধারী>ডিগ্রিধারী, পোষ্টিং> পোস্টিং, বিশেষ ভাবে>বিশেষভাবে।  ‘জন্য’ শব্দটি আলোচ্য বাক্যের জন্য নিষ্প্রয়োজন। 
এবার শেষ অনুচ্ছেদ দেখা যাক। একট শব্দ ‘ইঞ্জিনিংয়ারিং’। এটি কোন ভাষার শব্দ তা বোধগম্য নয়। সম্ভবত ‘ইঞ্জিনিয়ারিং’ লিখতে ‘ইঞ্জিনিংয়ারিং’ লেখা হয়েছে। ইনষ্টিটিউট>ইন্সটিটিউট,সমাজসেবার ভবন মিলনায়তন>সমাজ সেবা ভবন মিলনায়তন, স্বার্থক>সার্থক,  হোমিওপ্যাথির বোর্ড> হোমিওপ্যাথি বোর্ড। ‘স্পিকার’ বলতে জাতীয় সংসদের ‘স্পিকার’কে বুঝানো হয়।  গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে এমনই উল্লেখ আছে। সংগতকারণে এখানে অনুষ্ঠানের বক্তা বলতে ‘স্পিকার’ লেখা সমীচীন হয়নি। শৃংঙ্খলা>শৃঙ্খলা, শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য>শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য।

চিত্র নম্বর ৩
শুধু তাই নয়, পত্রিকায় লেখা আরও কয়েকটি প্রতিবেদন পড়েছি। সবকটি ভুল বানান ও হাস্যকর শব্দচয়নে ভর্তি। ম্যাগাজিনের জন্য দেওয়া বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায় এর বাণীটি আরও মারাত্মক, আরও ভয়ানক ভুলে জর্জরিত (চিত্র নম্বর ২)। এ বাণীটি পড়লে লেখকের শিক্ষা ও মাতৃভাষা-জ্ঞান দুটোই নিয়ে লজ্জায় বিমূঢ় হয়ে যেতে হয়। একজন শিক্ষিত লোক অর্ধ পৃষ্ঠার একটি লেখায় মাতৃভাষায় এত ভুল করতে পারেন! একই ম্যাগাজিনে লেখা ডা. এ সোবহানের লেখা ‘রাঙা শিশু’ গল্পটির বানান ও ভাষা আরও বিদঘুটে। এক পৃষ্ঠার একটি গল্পে লেখক কয়টি বানান ভুল করেছেন দেখুন (চিত্র নম্বর-৩)। দেখে মনে হয়, ভুলের মহড়া দেওয়ার জন্য ম্যাগাজিনটা প্রকাশ করা হয়েছে। এ কেমন ম্যাগাজিন, এরা কেমন বাঙালি! বাংলা ভাষার প্রতি এত অবজ্ঞা কীভাবে একজন মাতৃভাষীর পক্ষে সম্ভব!
সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনপ্রাপ্ত একটি মাসিক ম্যাগাজিনের সম্পাদকীয় ও লেখা যদি এমন হয় তো বাংলা ভাষা এখন কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে এবং এর অবস্থা এখন কত করুণ তা ভাবতে শরীর শিউরে ওঠে।
[ আমার এ লেখাতেও ভুল থাকতে পারে, সংশোধন কাম্য]

বানান ভুলের কবলে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ / ড. মোহাম্মদ আমীন


বানান ভুলের কবলে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০
যে কোনো বিবেচনায় ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০’ সরকারের একটি যুগোপযোগী একটি কার্যকর উদ্যোগ। শিক্ষার প্রত্যেক স্তর নিয়ে এ শিক্ষানীতিতে যে-সব পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে, তা যেমন আধুনিক, তেমনি বাস্তবসম্মত ও সুদূরপ্রসারী। এতৎসত্ত্বেও জাতীয় শিক্ষানীতি, ২০১০ পড়ে বাংলাভাষী হিসেবে কষ্ট লাগে।  জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক পুস্তিকা আকারে প্রকাশিত (৭১ পৃষ্ঠার) এই শিক্ষানীতির বানানভুল ও ভাষারীতি দেখে একজন স্বল্পশিক্ষিত ব্যক্তিও লজ্জায় চোখ ঢেকে ফেলবেন।

 বানানভুলের পাশাপাশি এতে যতিচিহ্নের ভুলপ্রয়োগসহ শব্দচয়নেও শৃঙ্খলার আভাস পাওয়া যায়নি। অনেক বাক্য অস্পষ্ট ও দুর্বল, ফলে অর্থ বুঝতে অসুবিধা হয়। কিছু কিছু বাক্যের পদবিন্যাস হাস্যকর, যা অনেক বাক্যকে অর্থহীন করে তুলেছে।  সাধারণত ‘সাথে’ ও ‘সঙ্গে’ পদদুটো যথাক্রমে পদ্য ও গদ্যে ব্যবহার শোভনীয় মনে করা হলেও এ পুস্তিকায় দুটোই ব্যবহার করা হয়েছে। বিকল্পসিদ্ধ বানানের ক্ষেত্রে প্রমিত শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি। যেমন : শ্রেণি বানানটি লেখা হয়েছে ‘শ্রেণী’।

উদাহরণ উপস্থাপনায় একই উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট চিহ্নে ব্যবহারে সমতা রক্ষিত হয়নি। আবার কোথাও কোথাও কোনো চিহ্নই ব্যবহার করা হয়নি। ফলে বাক্যের সৌন্দর্যহান ছাড়াও ঘটেছে প্রচুর অর্থ-বিভ্রাট। উদাহরণের ক্ষেত্রে কমা (,), ড্যাশ ( - ), বিসর্গ (ঃ), কোলন (:), কোলন ড্যাশ - ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়েছে। অথচ কোনো গ্রন্থে বানান বা যতিচিহ্ন ব্যবহারে অভিন্ন রীতি মেনে চলা আবশ্যক। এ পুস্তিকায় ‘যেমন’ শব্দটির পর নান চিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন : যেমন, যেমন:, যেমনঃ, যেমন, , যেমন - , যেমন : - প্রভৃতি । কোথাও এ-কারের শুরুতে মাত্রা দেওয়া হয়েছে, আবার কোথাও নেই। রেফ-এর পর ব্যঞ্জনবর্ণের দ্বিত্ব ও ঊর্ধ্বকমার বহুল ব্যবহার প্রমিত বাংলা রীতিকে অবহেলা করার শামিল। এ ছাড়া শব্দের শেষে বিসর্গ ব্যবহার, সমাসবদ্ধ শব্দসমূহ এক সঙ্গে না লেখা এবং একই বানানের একাধিক রূপ পুরো পুস্তিকাটির ভাষামানের চরম হানি ঘটিয়েছে। কোনো’ শব্দটি কোথাও লেখা হয়েছে ‘কোনো’ আবার কোথাও ‘কোনও’। তেমনি, দারিদ্র, দারিদ্র্য ; শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ; তৈরি, তৈরী ; কৌতুহল, কৌতূহল ; মাদরাসা, মাদ্রাসা, মাদ্রাসা; ইংরেজি, ইংরেজী; সংবলিত, সম্বলিত ; ধরণের, ধরনের ; উপর, ওপর ; যেতে, যেতে ; জরুরি, জরুরী ; যে সকল, যেসকল ; বয়স্কশিক্ষা, বয়স্ক শিক্ষা ; ধারাসংশ্লিষ্ট, ধারা-সংশ্লিষ্ট ; ইন্সটিটিউট, ইনস্টিটিউট ; মান উন্নয়ন, মানোন্নয়ন ; ইসলাম ধর্ম, ইসলামধর্ম ; মাষ্টার্স, মাস্টার্স ; ক্লাস, ক্লাশ ; চাকুরী, চাকরী, চাকরি, চাকুরি প্রভৃতি।  ‘সকল’ সাধুরীতির শব্দ, চলিত রীতিতে এর প্রতিশব্দ হলো ‘সব’ কিন্তু এ পুস্তিকায় ‘সকল’ ও ‘সব’ উভয় শব্দই চলিত রীতিতে ব্যবহার করা হয়েছে।

‘প্রাক-কথন’ এর প্রথম ও তৃতীয় লাইনে লেখা  ‘দারিদ্র বিমোচন’, ‘মেরুদন্ড’ বানান দেখে সত্যি মেরুদণ্ড ভেঙে দু টুকরা হয়ে  যাওয়ার মত কষ্ট লাগে। প্রাক-কথনের পঁচিশতম লাইনে রয়েছে ‘দারিদ্রমুক্ত’, একত্রিশতম লাইনে ‘তৈরী’, ঊনচল্লিশতম লাইনে ‘জীবন জীবিকার’, একচল্লিশতম লাইনে ‘দারিদ্রমুক্ত’, বিয়াল্লিশতম লাইনে ‘সুবর্ণ জয়ন্তি’ প্রভৃতি বানান ও শব্দ। তৃতীয় অনুচ্ছেদের শেষ লাইনে লেখা হয়েছে ‘চাহিদা পূরনে’। পুরণ বানানে হবে মূর্ধন্য-ণ। প্রাককথনে অন্য যে সকল বানানে প্রমিত রীতি অনুসরণ করা হয়নি সেগুলোর কয়েকটি হচ্ছে : শ্রেণী, দেয়া, কতকগুলি, উদযাপন, শহীদ প্রভৃতি বানানে প্রমিত রীতি অনুসরণ করা হয়নি। 
‘সন’ ও ‘সাল’ অর্থ বছর।তাই খ্রিস্টাব্দ’ শব্দের প্রতিশব্দ হিসেবে সন বা সাল ব্যবহার সমীচীন নয়। কিন্তু এখানে তা করা হয়েছে। তৃতীয় অনুচ্ছেদের চতুর্থ লাইনের ‘ সম্ভাবনা বাস্তবায়নের বিপুল সম্ভাবনা সৃষ্টি করে’ বাক্যংশটি একটি জাতির শিক্ষানীতির বাক্য হিসেবে উপযুক্ত হয়নি। যিনি রাজনীতি-বিষয় অর্থে ‘রাজনীতিক’ শব্দের প্রমিত ব্যবহার বাঞ্ছনীয় কিন্তু এখানে রাজনীতিবিদ অর্থে রাজনীতিক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। ষষ্ঠ অনুচ্ছেদের শেষ বাক্যে ‘রূপান্তরিত’ শব্দের স্থলে ‘পরিণত’ শব্দটা ব্যবহার করাই সমধিক যুক্তিযুক্ত ও প্রমিত। সপ্তম অনুচ্ছেদের একটি বাক্য হচ্ছে : শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিশেষ করে কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি আধুনিক যুগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সারা বিশ্বে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। এ বাক্যটি সংশায়বৃত, এখানে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ শব্দের পর ‘হিসেবে’ শব্দটি স্থান পাবার দাবিদার।
মুখবন্ধে রয়েছে প্রচুর ভুল-বানান, অপ্রমিত শব্দ, অপ্রসঙ্গিক বাক্য ও সংশয়াবৃত বাক্য। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় : ‘সদস্য বিশিষ্ট’, ‘প্রণয়ন কমিটি’, ‘সংশ্লিষ্ট’, ‘সবরকম’, ‘শিক্ষা লাভ’, ‘অন্তত:’, ‘নূন্যতম’, ‘মাঝ পথে’, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে’, ‘শিক্ষা জীবনের’,  ‘শিক্ষা জীবন’, ‘পরীক্ষা পদ্ধতি’, ‘নোট বই’, ‘টিউশনী’ ‘অনাকাঙ্খিত’ ‘মূল্যায়ণ’, পাঠদান পদ্ধতি, ‘মানব সম্পদ’, ‘সংগে’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
 প্রথম অধ্যায়ের শিরোনাম ‘শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য’। এ অধ্যায়ে ২৭টি লক্ষ্য ও নীতিগত তাগিদ বর্ণিত হয়েছে। ৪ নম্বর তাগিদের একটি শব্দ হচ্ছে ‘জাতীয় ইতিহাস’। জাতীয় পতাকা, জাতীয় উদ্যান, জাতীয় মসজিদ, জাতীয় ফুল, জাতীয় পাখি, জাতীয় বৃক্ষ, জাতীয় ফল প্রভৃতি রয়েছে কিন্তু জাতীয় ইতিহাস? হয়তো জাতির ইতিহাস বাগ্‌ভঙ্গির অর্থ প্রকাশে ‘জাতীয় ইতিহাস’ কথাটি ব্যবহার করা হয়েছে। এটি সমীচীন হয়নি। কারণ ‘জাতি’ আর ‘জাতীয়’ এক বিষয় নয়। চতুর্দশ তাগিদে ‘শিশুর/শিক্ষার্থীর’ অংশে ‘শিক্ষার্থী’ উল্লেখই যথেষ্ট ছিল। একই তাগিদের দ্বিতীয় লাইনে ‘সেটি’ শব্দের ব্যবহার বাক্যের সৌন্দর্য হানি ঘটিয়েছে। এর পরিবর্তে ‘তা’ দিলে ভালো হত। ‘বিজ্ঞান মনস্ক’, ‘জাতীয় ইতিহাস’, ‘সৌহার্দ’, ‘উৎপাদন সহায়ক’, ‘জ্ঞান বিকাশে’, ‘এতদসংক্রান্ত’,‘শিক্ষা চর্চা’,  সেলক্ষ্যে, ‘আদিবাসী সহ’, ‘এলাকা গুলোতে’, ‘শিক্ষা উন্নয়নে’, ‘ভালভাবে’, শারীরিক মানসিক’, ‘শরীর চর্চার’, ‘স্বাস্থ্য সচেতনতা’, মাদক জাতীয়, ‘নেশা দ্রব্যের’ প্রভৃতি এ অধ্যায়ে পরিদৃশ্য উল্লেখযোগ্য বানান বিভ্রাট। 

দ্বিতীয় অধ্যায়ে ‘অত্যাধিক’ শব্দটি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দুরাবস্থা’ গল্পকে স্মরণ করিয় দেয়। বিদেশি শব্দের বানানে ব্যবহার করা হয়েছে দীর্ঘ ঈ-কার। ‘ভিত্তি’ শব্দের  একটি প্রতিশব্দ ‘মূল’। তারপরও একটি বাক্যে ‘ভিত্তিমূল’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। তেমনি ব্যবহার করা হয়েছে ‘এক ও অভিন্ন’। এটাও বাহুল্য দোষে দুষ্ট। দশম লাইনটি দেখুন:  “এই পর্যায়ে শিক্ষাক্রম হবে  শিক্ষা ও বিদ্যালয়ের প্রতি শিশুর আগ্রহ সৃষ্টিমূলক এবং সুকুমার বৃত্তির অনুশীলন।” এখানে ‘এবং’ শব্দের ব্যবহার বাক্যের সৌন্দর্য ও অর্থ দুটোকে হাস্যকর করে দিয়েছে।  এমন একটি বাক্যে ত্বরান্বিত শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে যেখানে দ্রুত লেখা ছিল ব্যাকরণসম্মত [প্রশিক্ষিত যোগ্যতাসম্পন্নব্যক্তিদের (যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের) সরাসরি নিয়োগ এবং তরান্বিত পদোন্নতির মাধ্যমে উচ্চতর পদ পূরণের ব্যবস্থা করা।] আর একটা বাক্যে ‘তত্ত্বাবধান’ এর স্থলে লেখা হয়েছে ‘তত্ত্বাবধায়ন’ [যাতে তাঁরা তত্ত্বাবধায়ন ও  পরিবীক্ষনের (পরিবীক্ষণ) দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করতে পারেন।] হসন্ত দেওয়ার বিধান  প্রমিত বানানে নিরুৎসাহিত করা হলেও কোন্ বানানে হসন্ত দেওয়া হয়েছে কোনো কারণ ছাড়াই। লেখা হয়েছে ‘সমাপনী’ এটি প্রমিত শব্দ নয়। এরূপ আরও অগণিত অসংগতি এ অধ্যায়ের অনেক বাক্যে পাওয়া যাবে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে আরও যে সব বানান-বিভ্রাট রয়েছে সেগুলোর কয়েকটি তুলে ধরা হল : ‘কৌতুহল’, ‘সহজ আকর্ষণীয়’, ‘গীর্জা’, অক্ষরজ্ঞান সহ’, ‘অত্যাধিক’, ভিত্তিমূল’, ‘একাজ’, ‘বিদ্যালয় ভেদে’, ‘সেসকল’, ‘এক ও অভিন্ন’, ‘সহ-জীবনযাপনের’, ‘এছাড়া’ ‘শিক্ষা গ্রহণ’, ‘কায়িক শ্রম’, ‘প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়নে’, ‘শিক্ষা লাভের’, ‘শিক্ষা ক্ষেত্রে’, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের’, ‘দু’টি’, ‘শিক্ষা ব্যবস্থা’, ‘সবধরণের’,  ‘অনুমতি সাপেক্ষে’, ‘সম্প্রসারন’, ‘প্রয়োজনীয়সংখ্যক’, ‘অর্থ বছর’, ‘শিক্ষা প্রশাসন’, ‘জাতিসত্তা’, ‘এবং (সমীচীন ও)’, শিক্ষা ব্যবস্থা’, ‘যথা (এরপর কোনো চিহ্ন নেই)’, ‘সবধরণের মাদরাসার’, ‘শিক্ষা সংশ্লিষ্ট’, ‘সবধরণের মাদরাসাসমূহ’, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’, ‘শিক্ষা কর্মসূচি’, ‘ইংরেজী’, ‘সবধরণের মাদরাসা সহ’,  ‘দেওয়াপর্যন্ত’, ‘বাধ্যতামুলক’, ‘শিক্ষা প্রদান’,  ‘শিক্ষা পদ্ধতি’, ‘অনুকুল’, ‘কর্মকান্ড’, ‘ঝড়ে পড়া’, ‘যেসকল’, ‘সেসকল’, ‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে’, কর্মসূচির ভিত্তিতে’, ‘সেজন্য’, ‘সমাপনী’, ‘আপাতত:’, ‘সম্বলিত’, ‘যথোপোযুক্ত’ ‘প্রশিক্ষণ ক্ষমতা’, ‘যোগ্যতাসম্পন্নব্যক্তিদের’, ‘পদে উন্নীত’, ‘উপজেলা ভিত্তিক’, ‘থানা ভিত্তিক’, ‘বিষয়ওয়ারী’, ‘পরিবীক্ষণ’, একাডেমী এবং ‘এক্ষেত্রে’ প্রভৃতি। এগুলো শেষ নয়, আরও আছে এমন অনেক ভুল।



তৃতীয় অধ্যায়ের নাম ‘বয়স্ক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা’। অন্যান্য অধ্যায়ের মতো এখানেও প্রচুর বানান ভুল। শুধু তাই নয়, শব্দচয়নেও মারাত্মক অবহেলা লক্ষণীয়। একটা বাক্যে লেখা হয়েছে ‘বেশি বয়সীদের’ এমন না-লিখে ‘অধিক বয়স্কদের’ লিখলে বাক্যটা জোরালো হত। কারণ বেশি আর অধিক বাক্যদুটোর মধ্যে সুক্ষ্ম হলেও কিছু পার্থক্য আছে। এক স্থানে লেখা হয়েছে ‘বয়স্ক শিক্ষা’ আর এক স্থানে দেখা যায় ‘ বয়স্কশিক্ষা’। একটি বাক্য রীতিমতো ভয়ঙ্কর : “বয়স্ক শিক্ষার উদ্দেশ্য মানুষকে সাক্ষর, লেখা-পড়া ও হিসাব-নিকাশে নূন্যতমভাবে দক্ষ, মানবিক গুনাবলির চেতনায় উদ্দীপ্ত, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সচেতন এবং পেশাগত দক্ষতায় উন্নত  করে তোলা।’ এ বাক্যে ন্যূনতমভাবে শব্দটির ব্যবহার কত হাস্যকর তা স্বল্পশিক্ষিত কারও পক্ষেও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। ন্যূনতমভাবে দক্ষ করার প্রয়াস আসলে হাস্যকর। ‘সাপেক্ষে’ শব্দটি সাধারণত পূর্ববর্তী শব্দের সঙ্গে সেঁটে বসে কিন্তু এখানে তা করা হয়নি। যেমন ‘মূল্যায়ন সাপেক্ষে। ‘ভিত্তিতে’ শব্দটির ক্ষেত্রেও একই ভুল দেখা যায়; যেমন : ‘অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে’। অধিকন্তু এ অধ্যায়ে অন্য যে ভুলগুলো চোখে মারাত্মকভাবে খোঁচা দেয় সেগুলোর মধ্যে ‘সামগ্রীকভাবে’, ‘জাগরন’, ‘শিক্ষা লাভ’, ‘ব্যতিত’, ‘শিক্ষাদান পদ্ধতি’, ‘শিক্ষাক্রম বিষয়’, ‘গণশিক্ষা সংক্রান্ত’, ছেলেমেয়ে’,‘স্বেচ্ছা সেবক’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। 

‘মাধ্যমিক শিক্ষা’ আলোচ্য পুস্তিকার চার নম্বর অধ্যায়ের শিরোনাম। এখানেও বানান ও শব্দচয়ন বিভ্রাট দেশের বর্তমান ধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের করুণ কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বানানের আদর্শমান এখানেও রক্ষিত হয়নি। ‘দেয়া’ শব্দটি প্রমিত না-হলেও লেখা হয়েছে। অবশ্য ‘দেওয়া’ শব্দের অস্তিত্বও রয়েছে। বানানে এমন অস্থিরতার কারণ অজানা। কোথাও লেখা হয়েছে ‘মাদরাসা’ আবার কোথাও ‘মাদ্‌রাসা’। প্রয়োজন-ভিত্তিক ও ‘বিষয়ভিত্তিক’ লেখা হলেও অনেক শব্দে ‘ভিত্তিক’ আর ‘ভিত্তিতে’ শব্দকে পূর্বের শব্দ থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে; যেমন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে’, জাতীয় ভিত্তিতে’, ‘ফলাফলের ভিত্তিতে’ প্রভৃতি। ‘সাপেক্ষে’ শব্দটাকেও অনেক জায়গায় পূর্ববর্তী শব্দের সঙ্গে সেঁটে বসালেও এখানে লেখা হয়েছে ‘অন্তর্ভুক্তি সাপেক্ষে’। ‘প্রতি’ ব্যাপ্তি বুঝালে পরবর্তী শব্দের সঙ্গে সেঁটে বসে। এটাই নিয়ম, পঞ্চম শ্রেণির  শিশুরাও তা জানে। কিন্তু এখানে লেখা হয়েছে ‘প্রতি বছর’। হয়েছে এসকল (এস কল), রীতমতো হাস্যকর। এ সকল লিখলে কোনো সমস্যা হত না। এ অধ্যায়ে ‍প্রাথমিকভাবে পরিদৃষ্ট অন্যান্য ভুল বানানের মধ্যে ‘শিক্ষার ভিত্তিতে’, বিভিন্নরকমের ‘বিভিন্নরকমের’, ‘শ্রেণী কক্ষ’, ‘বিভিন’, ‘কর্মকান্ড’, ‘উত্তীর্ন’, ‘অংশ গ্রহণ’, ‘উভয়ক্ষেত্রে’,  ‘এক্ষেত্রে’, ‘মঞ্জুরী’ প্রভৃতি চোখের সঙ্গে সঙ্গে মনেও আঘাত আনে।  



পঞ্চম অধ্যায়ের নাম বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা। চমৎকার উদ্দেশ্য কিন্তু বানান ও শব্দচয়নের ভুল যেন দুধে লেবুর রস। কৌশল অনুচ্ছেদের ২১ নম্বর বিবরণে লেখা হয়েছে* ‘এরকম’, শব্দটির অর্থ হতে পারে ‘এর কম’। কিন্তু বাক্যটি পড়লে বিস্ময়ে হতবাক হতে হয় : যুক্তিসঙ্গত স্বল্প সময়ের মধ্যে এরকম শিক্ষার্থীদের অধিকাংশকে বৃত্তিমূলক শিক্ষাক্রমে নিয়ে আসা হবে।’ তা হলে ‘এরকম’ শব্দের অর্থ কী? পুস্তিকার বিভিন্ন জায়গায় সেক্ষেত্রে লেখা হলেও এখানে লেখা হয়েছে সকল ক্ষেত্রেই। উত্তীর্ন’ বানানে নত্ববিধান উধাও। অনেক স্থানে ‘দেয়া’ লেখা হয়েছে। এ অধ্যায়ে কয়েক জায়গায় দেখা যায় ‘দেওয়া’। এখানে পরিদৃশ্য অন্যান্য বানান বিভ্রাটের মধ্যে ‘ব্যাপক ভিত্তিক’, ‘ধরণের’ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে’, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান’ ‘নূন্যতম’, ছয়মাসের’, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের’, ‘শিল্প কারখানায়’, ‘প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’, ‘শিক্ষা খাতে’, ‘শিক্ষা গ্রহণ’, ‘জ্ঞান লাভের’ প্রভৃতি মারাত্মক দৃষ্টিকটু।


মাদ্‌রাসা শিক্ষা  আলোচ্য পুস্তিকার ষষ্ঠ অধ্যায়। শিরোনামে অবস্থিত ‘মাদ্‌রাসা’ বানানে হসন্ত দেওয়া হলেও অনেক বানানে তা নেই। এটি কোন ধরনের বৈষম্য জানা মুশকিল। ‘দ্বীন’ অর্থ ‘ধর্ম’ আবার ‘ইসলাম’ একটি ধর্মের নাম। সুতরাং লেখা উচ্তি ছিল ‘দ্বীন ইসলাম’ কিন্তু  লেখা হয়েছে ‘দ্বীন ও ইসলামের’। ‘মাদ্‌রাসা’ অধ্যায়ের অন্যান্য ভুল বানানের মধ্যে, ‘সেজন্য’ ‘গঠণ’, ‘ধর্ম অনুমোদিত’, ‘এবংআলিম’, ‘যোগ্যতা সম্পন্ন’, ‘অনুসরন’, আারো, সরবরাহ সাপেক্ষে’, ‘কমিশন’করে’, ‘শিক্ষা ধারায়’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
 

ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা অধ্যায়টি ক্ষুদ্র পরিসরের। তাই ভুলে সংখ্যা কম হলেও আনুপাতিক বিবেচনায় কম নয়। ষষ্ঠ ও সপ্তম লাইনে একই বাক্যে  একবার ব্যবহার করা হয়েছে ‘দেওয়া’  আর একবার ব্যবহার করা হয়েছে ‘দেয়া’ । এ অধ্যায়ে অন্যান্য ভুলের মধ্যে ‘সা:’, ‘সেভাবে’,‘পঠন পাঠনের’, ‘সৎ সাহস’, ‘দেশ প্রেমে’, ‘খ্রিষ্টধর্ম’, ‘খ্রিস্ট’, ‘এসকল’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। বৌদ্ধধর্ম শিক্ষায় একটি বাক্যাংশ দেখুন, - -  কর্ম জীবনের একমাত্র পাথেয় গুরুত্বসহকারে সেই শিক্ষা দেওয়া হবে। এখানে ‘পাথেয়’ শব্দের পরে ‘সুতরাং’ বা এরূপ অন্য কোন যৌক্তিক শব্দ দিলে বাক্যটির অর্থ জোরালো হত।


অষ্টম অধ্যায়ের শিরোনাম উচ্চশিক্ষা। উচ্চশিক্ষা বলে হয়তো এ অধ্যায়ে ভুলের প্রকৃতিও উচ্চ। একবার লেখা হয়েছে ‘সকল ক্ষেত্রে’ আবার লেখা হয়েছে ‘সর্বক্ষেত্রে’; একবার লেখা হয়েছে ‘উদ্ভাবনী’ আবার লেখা হয়েছে ‘উদ্ভাবন’। কৌশল উপ-অধ্যায়ের অষ্টম অনুচ্ছেদের প্রথম বাক্যে একবার লেখা হয়েছে ‘ যে সকল’ আবার লেখা হয়েছে ‘যেসকল’। একই উপ-অধ্যায়ের একটি বাক্য – ‘উচ্চশিক্ষায় বাংলায় সম্প্রসারিত ও সমৃদ্ধি করার লক্ষ্যে ইংরেজিসহ অন্যান্য ভাষায় রচিত আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যবহারযো্য গুরুত্বপূর্ণ রচনা বাংলায় অনুদিত হওয়া প্রয়োজন।’ শব্দচয়নজনিত ত্রুটিতে ভরপুর বাক্যটি বিভ্রান্তিকর। এ অধ্যায়ে শাব্দিক ভুলের মধ্যে ‘জ্ঞান সঞ্চারণ’, ‘সহায়তাদান’, ‘জ্ঞান চর্চা’, ‘গবেষনা’, ‘উদ্ভাবনী’, ‘প্রবণতার ভিত্তিতে’, ‘গোষ্ঠির’, ‘সুবিধাসৃষ্টির’, ‘তারজন্য’, ‘সমাপনী’, ‘শুধুমাত্র’, ‘আরো’, ‘সমৃদ্ধ’‘প্রত্যয়ন পত্রের ভিত্তিতে’, ‘ মেধার ভিত্তিতে’,  এলক্ষ্যে, ‘শিক্ষা বছর. ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে’, ‘এসব’, ‘এরকম’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।


নবম অধ্যায়ের নাম ‘প্রকৌশল শিক্ষা’। এ অধ্যায়ে একটা নতুন বাগ্‌ভঙ্গি দেখা গেল। সেটি ‘যথা প্রকৌশল’ এমনটি আর দেখিনি, ভুল তো বটে। ‘যথা’ শব্দের পর উপযুক্ত যতিচিহ্ন দেওয়া হয়নি। এমন ভুল আরও অনেক অধ্যায়ে রয়েছে। একবার লেখা হয়েছে এ সকল,আবার এসকল,‘আরো’ শব্দের অর্থ কোথাও পাওয়া যায়নি। এ অধ্যায়ের অন্যান্য ভুলগুলো হচ্ছে :  ‘সকলক্ষেত্রেই’, ‘এগুলোর’, ‘শতাব্দী’, ‘সমাজ জীবনের’, ‘দারিদ্র দুরীকরণে’, ‘তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর’, ‘শিফ্‌টে’, ‘প্রয়োজনীয়সংখ্যক’. ‘অভুতপূর্ব’, ‘গ্যাস শিল্পসহ’, ‘তৈরির’, ‘চালুকরা’, ‘এসকল’, ‘চেম্বার অব ইন্ড্রাস্ট্রিগুলোর’, ‘শিল্প প্রতিষ্ঠান’,  ‘যথা প্রকৌশল’, ‘অংশ গ্রহন’,  ‘প্রদানকরা’, ‘মঞ্জুরী কমিশনের’, ‘প্রতি বছরের’, ‘প্রণয়ণ’ ও  ‘শিক্ষা বর্ষের’ প্রভৃতি। দেড় পৃষ্ঠার একটি অধ্যায়ে এত ভুল  প্রকৌশল শিক্ষা অধ্যায়কে   করুণ করে দিয়েছে।

চলবে-