Wednesday 24 June 2015

বাংলাদেশ বনাম ভারত ওয়ানডে ক্রিকেট জরিপ-২০১৫ / ড. মোহাম্মদ আমীন

এ মাত্র শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম ভারত ওয়ানডে ক্রিকেট জরিপ-২০১৫ ও তার বিশ্লেষণ। ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত ওয়ানডে সিরিজে ভারত ২-১ ম্যাচে হেরেছে। এ বিষয়ে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়েছে।  ১১৭ জন বাংলাদেশিকে  জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাদের কেউ মুসলিম নন, তবে একই ধর্মাবলম্বী। কৌশলে তাদের অভিমত জানার চেষ্টা করা হয়েছে, এটি যে জরিপ এমনটি তাদের কাউকে বুঝতে দেওয়া হয়নি।
জরিপে অংশগ্রহণকারীগণের মধ্যে ১০৩ জন ছিলেন উচ্চশিক্ষিত। বাকিরা স্বল্পশিক্ষিত, তবে ধনী। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কেবল ৯ জন লোক ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ জয়ী হওয়ায় খুশি হয়েছেন। ১১ জন  কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। হেসে এড়িয়ে দিয়েয়েছেন। বাকি ৯৭ জনের প্রত্যাশা ছিল ভারতের জয়।

Saturday 20 June 2015

হুমায়ূন আহমেদ, জাফর ইকবাল, আহসান হাবীব ও বাংলা কথাসাহিত্যে জনপ্রিয় নবধারার উৎস-পরুষ ফয়জুর রহমান আহমেদ / ড. মোহাম্মদ আমীন

ফয়জুর রহমান আহমেদ : বাংলা কথাসাহিত্যে জনপ্রিয় নবধারার উৎসপুরুষ

পুলিশ অফিসার, কথাসাহিত্যিক ও বাংলা কথাসাহিত্যে জনপ্রিয় নবধারার উৎস-পুরুষ ফয়জুর রহমান আহমেদ ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর স্ত্রীর নাম আয়েশা আখতার খাতুন। ফয়জুর রহমান হচ্ছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ ও মুহম্মদ জাফর ইকবালের পিতা। হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮
ফয়জুর রহমান আহমেদ
খ্রিস্টাব্দের ১৩ নভেম্বর তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত নেত্রকোণা মহকুমার (বর্তমানে জেলা) কেন্দুয়ার কুতুবপুর গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০১২ খ্রিস্টাব্দের ১৯ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পুলিশ বিভাগের অনেকে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে নানাভাবে অবদান রেখেছেন। তবে ফয়জুর রহমানের অবদান যেমন সুদূরপ্রসারী ছিল তেমনি পরবর্তীকালে তা অত্যন্ত কার্যকর প্রতীয়মান হয়েছেন। তিনি সাহিত্যকর্মে জড়িত থাকলেও তেমন বিস্তৃতি পরিসরে যাওয়ার আগে শহীদ হন। কিন্তু তিনি তাঁর সন্তানদের যেভাবে গড়ে তুলেছেন এবং সন্তানগণ যেভাবে গড়ে উঠেছেন তা পরবর্তীকালে বাংলা সাহিত্য সম্ভারে এনে দিয়েছে নতুন এক জনপ্রিয় ধারা।

পুলিশ অফিসার ফয়জুর রহমান আহমেদ ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পিরোজপুর মহকুমার এসডিপিও হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ৫ মে পাকিস্তানি হানাদারেরা পিরোজপুরের মহকুমা পুলিশের প্রধান ফয়জুর রহমান আহমেদকে হত্যা করে। হত্যার পর তার লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। পরে গ্রামবাসীর উদ্যোগে তাঁর মৃতদেহ নদী থেকে উদ্ধার করে দাফন করা হয়। অনেকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ফয়জুর রহমান আহমেদ পিরোজপুর মহকুমায় বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকা-েও তিনি প্রচুর সময় ব্যয় করতেন। মূলত তাঁকে হত্যা করার বিষয়ে হানাদার বাহিনীর এটি অন্যতম কারণ ছিল। হুমায়ূন আহমেদ জনপ্রিয় হওয়ার পূর্ব-পর্যন্ত দীর্ঘদিন ফয়জুর রহমানের কবর নিয়ে তেমন কেউ মাথা ঘামায়নি। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে বহু বছর পর মুহম্মদ জাফর ইকবাল তাঁর বাবার কবর দেখতে যান। এরপর তাঁর কবর ব্যাপকভাবে জনসমক্ষে আসে।
হুমায়ূন আহমেদ

ফয়জুর রহমান আহদে ও তাঁর মা আয়েশা ফয়েজ দুজনেই ছিলেন সাহিত্যিক। পারিবারিক পরিম-লে সাহিত্য-সংস্কৃতি-
চর্চার অনুকূল আবহে তঁঅর সন্তানগণের  শৈশব জীবন অতিবাহিত হয়। ফয়জুর রহমানের সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল। তিনি সমকালীন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন। বগুড়ায় অবস্থানকালে ‘দীপ নেভা যার ঘরে’ নামের একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এ গ্রন্থে তিনি তাঁর স্বদেশ ভাবনা ও আর্থসামাজিক বিষয়গুলো দার্শনিক নান্দনিকতায় তুলে ধরেছেন।

ফয়জুর রহমান আহমেদ নিজে সাহিত্য সৃষ্টির পাশাপাশি সন্তানদের সাহিত্যচর্চায় জন্য উৎসাহ দিতেন। তাঁর প্রথম সন্তান হুমায়ূন আহমেদ, দি¦তীয় সন্তান মুহম্মদ জাফর ইকবাল একজন কথাসাহিত্যিক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং কনিষ্ঠ সন্তান আহসান হাবীব খ্যাতিমান রম্যলেখক ও কার্টুন ম্যাগাজিন ‘উন্মাদ’-এর সম্পাদক। তাঁদের মা আয়েশা ফয়েজও লেখালেখি করতেন।  ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে ‘জীবন  যে রকম’
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
নামে তাঁর একটি আত্মজীবনমূলক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ফয়জুর রহমানের ঐকান্তিক পরিচর্যা ও আগ্রহ তিন ভাইকে লেখার জগতেই শুধু আনেননি, স্থায়ীই করে দিয়েছেন চিরকালের কোলে সাহিত্যের নির্মেঘ মহিমায়। পুলিশ অফিসার পিতার পৃষ্ঠপোষকতা ও উৎসাহ না-থাকলে হয়তো বাংলা সাহিত্য এ তিনরত্নের বিরল সাহিত্যকর্ম হতে বঞ্চিত হতো- এমনটি বলা অযৌক্তিক হবে না। এ হিসাবে তাঁকে বাংলা সাহিত্যে নবধারার প্রতিষ্ঠাতা তিন দিকপালের স্রষ্টা বলা যায়। ফয়জুর রহমান আহমেদের এ ভূমিকা ও অবদান বঙ্কিমচন্দ্র চেট্টোপাধ্যায়ের পিতা যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তুলনীয়।
আহসান হাবীব
পিরোজপুর মহকুমায় চাকরিকালীন ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ৫ মে একজন লোক এসে এসডিপি ফয়জুর রহমান আহমেদকে স্থানীয় মিলিটারি ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য
বলে।  তিনি সরল বিশ্বাসে মিলিটারি ক্যাম্পে যান। এরপর তাঁকে আর কেউ
জীবিত দেখেননি। পাকিস্তানি বাহিনী তাঁকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। পিরোজপুরেই  শহিদ ফয়জুর রহমান আহমেদকে দাফন করা হয়। তাঁর সমাধি ফলকে লেখা আছে :
‘নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে
রয়েছ নয়নে নয়নে’
ফয়জুর রহমান আহমেদ
(মহকুমা পুলিশ প্রধান)

Monday 15 June 2015

ড. মোহাম্মদ আমীনের গ্রন্থসমূহের তালিকা / ড. এ কে এম আখতারুল কবীর

১. জর্জ ওয়াশিংটন হতে বারাক ওবামা; আগামী প্রকাশনী, ২০০৯, মূল্য - ৪০০ টাকা।
২. পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জাতির পিতা; আগামী প্রকাশনী, ২০১১, মূল্য - ৩০০ টাকা।
৩. সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী ১৯০১-২০১৩; আগামী প্রকাশনী, ২০১২, মূল্য - ৫০০ টাকা।
৪. বৈচিত্র্যময় তথ্যে সচিত্র নোবেল প্রাইজ; আগামী প্রকাশনী, ২০১১; মূল্য - ২০০ টাকা।
৫. বঙ্গবন্ধুর বাণী; আগামী প্রকাশনী; ৭০ টাকা।
৬. সুবেদার আহমদ হোসেন বীর প্রতীকের জবানিতে ঠাকুরগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ ; আগামী প্রকাশনী, ২০০৫, মূল্য - ৮০ টাকা।
৭. হাসতে হাসতে বাংলা শেখা ; আগামী প্রকাশনী, ২০০৬, মূল্য - ৮০ টাকা।
৮. বাংলা সাহিত্য ও ভাষা আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ; আগামী প্রকাশনী
৯. সহজ বাংলা উচ্চারণ; আগামী প্রকাশনী; ২০০৬, মূল্য - ৯০ টাকা।
১০. আহমদ ছফার চোখে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী; আগামী প্রকাশনী
১১. বঙ্গবন্ধু চিরন্তন মহামানব; আগামী প্রকাশনী, ২০১০; ১০০ টাকা।
১২. নন্দিত কান্না নিন্দিত হাসি ; আগামী প্রকাশনী; ২০০৭, মূল্য - ১০০ টাকা।
১৩. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব : অলৌকিক মহিমা; আগামী প্রকাশনী, ২০০৬; মূল্য - ৭০টাকা।
১৪. দুই রাজ কুমারী ; আগামী প্রকাশনী, ২০০৮, মূল্য - ৭০ টাকা।
১৫. রমণীয় পাঁচালী; আগামী প্রকাশনী; ২০০৭, মূল্য - ৮০ টাকা।
১৬. খরগোশ ও কচ্ছপ; আগামী প্রকাশনী, ২০০৮, মূল্য - ৮০ টাকা।
১৭. বদল বাড়ির ভূত; আগামী প্রকাশনী, ২০১০, মূল্য -৭৫ টাকা।
১৮. মানুষই সেরা; আগামী প্রকাশনী, ২০০৫; মূল্য - ৪০ টাকা।
১৯. আন্তর্জাতিক দিবস ( ছোটদের); আগামী প্রকাশনী, মূল্য - ৭০ টাকা।
২০. অভয়নগরের ইতিহাস ; আগামী প্রকাশনী; ২০০৬, মূল্য - ৬০০ টাকা।
২১. মোহনীয় নরক; আগামী প্রকাশনী, ২০১৩; মূল্য - ৪৫০ টাকা।
২২. বাংলা বানানে ভুল কারণ ও প্রতিকার; আগামী প্রকাশনী, ২০১১, মূল্য - ৩০০টাকা।
২৩. তিলোত্তমা হাতিয়া: ইতিহাস ও ঐতিহ্য; হাতিয়া সমিতি, চট্টগ্রাম, ২০০১; মূল্য - ২০০টাকা।
২৪. তিলোত্তমা হাতিয়া : সমস্যা ও সম্ভাবনা; প্রকাশক, চেয়ারম্যানবৃন্দ, ২০০২, মূল্য - ১০০ টাকা।
২৫. সিঙ্গাপুর আইসিটি সম্মেলনে সৈয়দ আবুল হোসেন; আনন্দধারা, ২০১২, মূল্য - ২০০ টাকা।
২৬. উল্টোদেশে নন্দ ঘোষ; জাগৃতি প্রকাশনী, ২০১১; মূল্য - ১২৫ টাকা।
২৭. ভেদরগঞ্জের ইতিহাস; উপজেলা প্রশাসন; মূল্য - ১০০ টাকা।
২৮. চকরিয়ার ইতিহাস; আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন কন্ট্রকটার; ২০০২; মূল্য - ২০০ টাকা।
২৯. ম্যাজিস্ট্রেসি ও আদেশনামা; জাগৃতি প্রকাশনী; ২০০২, মূল্য - ৯০ টাকা।
৩০. ইসলামি মূল্যবোধ ও বঙ্গবন্ধু; জাগৃতি প্রকাশনী; ২০০৬, মূল্য - ২৫০ টাকা।
৩১. বাংলা সাহিত্যের অ আ ক খ; জাগৃতি প্রকাশনী, ২০০২, মূল্য - ৯০ টাকা।
৩২. বাংলা বানান ও শব্দ চয়ন; জাগৃতি প্রকাশনী; মূল্য -১২৫ টাকা।
৩৩. রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের কথা; জাগৃতি প্রকাশনী, ২০০৩; মূল্য - ৬৫ টাকা।
৩৪. বন মামলা দায়ের ও পরিচালনার কৌশল; জাগৃতি প্রকাশনী, ২০০২, মূল্য - ৬০ টাকা।
৩৫. পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আইন; বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ, ২০০০; মূল্য - ৩৫০ টাকা।
৩৬. জামিন তত্ত্ব ও রায়; মেরিট প্রকাশনী; ২০০০, মূল্য - ৭০ টাকা।
৩৭. মামলা ও আইনি হয়রানি হতে নিষ্কৃতির উপায়; জাগৃতি প্রকাশনী, ২০০৩, মূল্য - ৬০ টাকা।
৩৮. প্রশাসনের ভাইরাস; নিজ, ১৯৯৯, মূল্য - ৭০ টাকা।
৩৯. আহমদ ছফার চোখে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী, জাগৃতি প্রকাশনী, মুল্য - ৭০ টাকা।
৪০. জল দুনিয়ার মানুষ; অনন্যা; ২০১১, মূল্য -১৬০ টাকা।
৪১. সময়ের পরশ পাথর; জাগৃতি প্রকাশনী; ২০১৩, মূল্য - ৬০০ টাকা।
৪২. সময়ের পরশ পাথর; আনন্দধারা, ২০১৩, মূল্য - ১০০০ টাকা।
৪৩. জেলা, উপজেলা ও নদ-নদীর নামকরণের ইতিহাস; গতিধারা; ২০১২, মূল্য - ৬০০ টাকা।
৪৪. শুদ্ধ বানান চর্চা; শুবাচ , ২০১৪, মূল্য - ১৫০ টাকা।
৪৫. রাজকীয় জীবন, শারমেয় মরণ; হাওলাদার প্রকাশনী, ২০১৩; মূল্য - ১৫০ টাকা।
৪৬. আন্তর্জাতিক দিবস (রঙিন); হাওলাদার প্রকাশনী; ২০১৪, মূল্য - ৫৫০ টাকা।
৪৭. স্বপ্ন জড়ানো পাহাড়; বিজয় প্রকাশনী; ২০১২, মূল্য - ২০০ টাকা।
৪৮. গদাই বাবুর তীর্থযাত্রা; মিজান পাবলিশার্স, ২০১১; মূল্য - ৭৫ টাকা।
৪৯. Women marriage and love, ড. মোহাম্মদ আমীন, হাওলাদার প্রকাশনী।
৫০. রঙ্গরসে বাংলা বানান, ড. মোহাম্মদ আমীন, হাওলাদার প্রকাশনী
৫১. অফিস-আদালতে বাংলা লেখার নিয়ম, ড. মোহাম্মদ আমীন, মাওলা ব্রাদার্স।
৫২. বিড়ম্বনা, ড. মোহাম্মদ আমীন, জাগৃতি প্রকাশনী।
৫৩. শুদ্ধ বানান চর্চা, ড. হায়াৎ মামুদ ও ড. মোহাম্মদ আমীন

Saturday 14 March 2015

স্ত্রীবাচক শব্দে পুরুষাধিপত্য / ড. মোহাম্মদ আমীন

স্ত্রীবাচক শব্দে পুরুষাধিপত্য

পুত্র শব্দের ব্যুৎপত্তিগত বিশ্লেষণে দেখা যায়, ‘পুৎ’ নামক নরক থেকে উদ্ধার করে বলে ছেলে সন্তানের নাম পুত্র। তা হলে কন্যার ব্যুৎপত্তি কী? সে কাউকেই ত্রাণ বা উদ্ধার করতে পারে না, বরং তার কাছ থেকে জন্মদাতা ত্রাণ চায়। কন্যার মতো শব্দটিকেও কামনার রেশ দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মহাভারতে ব্যাসদেবের ব্যাখ্যা দেখুন : সর্বান্ কাময়তে যস্মাৎ (৩.৩০৬.১৩)। এর অর্থ ‘কন্যা মানে ‘কাম্যা’। কন্ আর কম্ কুটুম্ব ধাতু। ‘ভগিনী’ শব্দটির অর্থ ভগাযুক্ত, অনেকে সরাসরি স্ত্রীচিহ্ন-ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করেন। আলংকারিক কবি দণ্ডী ভগিনী শব্দকে জুগুপ্সাব্যাঞ্জক বলেছেন, সাহিত্যে শব্দটির ব্যবহার থেকে বিরত থাকতেও বলেছেন - ভগিনী-ভগবত্যাদি গ্রাম্যকক্ষাং বিগাহতে। পুরুষের সমকক্ষ হয়েও কন্যা কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদের দাবিদার হবে তা ছিল কল্পনারও বাইরে। এ জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ, প্রেসিডেন্ট, চেয়ারম্যান, মন্ত্রী ইত্যাদির স্ত্রীলিঙ্গের কথা ভাবাই হয় নি। ভার্যা নামটাই অবমাননাকর। তার উপর যৌনতা আরোপিত হওয়ায় ‘ভার্যা’ যখন পুত্র উৎপাদনের যন্ত্র ( পুত্রার্থে ক্রিয়তে ভার্যা) হয়ে দাঁড়ায় তখন সত্যি কষ্ট হয়। কত জঘন্য ছিল তখনকার সমাজপতিরা। অঙ্গনা, রমণী, কামিনী, ললনা, প্রমদা, যোযা, যোযিৎ, বনিতা এরূপ অসংখ্য নামেই নারীদের ডাকা হয়। কিন্তু কোনটিতে নারী হিসেবে নারীর মর্যাদা দেওয়া হয় নি। এটি প্রাচীনকালে নারীদের প্রতি পুরুষ-শাষিত সমাজের নির্লজ্জ জুলুম ও চরম আধিপত্যবাদী নৃশংস মনোবৃত্তির পরিচায়ক। এখনও অনেকের মধ্যে এরূপ ঘৃণ্য আচরণ লক্ষণীয়।
এবার শব্দগুলোর ব্যুৎপত্তি বিশ্লেষণ করা যাক। অঙ্গনা শব্দে অঙ্গসৌষ্ঠবের আকর্ষকতাকে প্রকট করে তোলা হয়েছে। ‘রমণী’ শব্দটি যে রমণের ঈঙ্গিতবাহী তা-তো সবাই জানেন। এ প্রসঙ্গে কবিকঙ্কণের একটি লাইন, ‘রমণে রমণী মরে কোথাও না শুনি।’ ‘কামিনী’ শব্দ কম্ -ধাতুজ্, কামনারই ধন, ব্যাখ্যা করা হয়েছে অত্যন্ত কামুকী হিসেবে। কাশীরাম লিখেছেন, ‘কামিনী দেখিয়া কামে হইল বিভোর।’ ললনা মানে বিলাসিনী, পুরুষকে যে লুব্ধ করে ছলাকলায় (লালয়িত পুমাংসম)। ‘প্রমদা’ শব্দে আছে মাদকতার কথা। ‘যোযা’ ও যোযিৎ’ ললনার অর্থবাহী অর্থাৎ বিলাসিনী, পুরুষকে যে প্রলুব্ধ করে। ‘স্ত্রী’ শব্দে গর্ভধারণের বিষয়টাই ছিল মুখ্য। ‘স্তৈ’ ধাতুর মূলে, স্ত্যায়তে শুক্র শোণিতে য়ম্যাস্, যার অর্থ ‘শুক্রশোণিত যাতে কাঠিন্য পায়’। শুধু সংস্কৃত ভাষায় নয়, ইংরেজি ও ল্যাটিন ভাষাতেও নারীদের প্রতি এমন ন্যাক্কারজনক আচরণ করা হয়েছে। ল্যাটিন sator শব্দের সঙ্গে স্ত্রীর উচ্চারণ-সাম্য লক্ষণীয়। ল্যাটিন শব্দটির অর্থ begetter । স্ত্রীবাচক ‘দার’ শব্দটির মূল অর্থ কৃষ্টভূমি। নারীও ভূমিকল্পা, বীজ-বপনে সন্তান-শস্য উৎপাদিকা।
ইংরেজিতে দেখুন, woman, mistress, madam কোন শব্দের ব্যুৎপত্তিগত ইতিহাস নারী-পুরুষ সাম্য ও মর্যাদা বিবেচনায় শোভনীয় নয়। প্রকৃতপক্ষে woman এসেছে wifeman থেকে। যেখানে নারীর কোন স্বতন্ত্র পরিচয়কে মর্যাদার সঙ্গে তুলে ধরা হয় নি। এখানে নারীর পরিচয় কারও স্ত্রী হিসেবে। mistress শব্দের আদি ও উৎসার্থ ছিল অবৈধ প্রেমিকা, শব্দটা বর্তমান অর্থে আসতে বেশ সময় নিয়েছে। madam (<ma dam = my lady) শব্দটি আগে স্ত্রীলোকের প্রতি প্রণয় সম্বোধন হিসেবেই ব্যবহৃত হত, চসার এর সময়েও শব্দটির অর্থের অবনতি ঘটে নি। Restoration আমলে ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দ থেকে শব্দটির অর্থের অবনতি ঘটে এবং অর্থ দাঁড়ায় বেশ্যাবাড়ির মালকিন, অর্থাৎ আমরা যাকে মাসি বলি। এখন শব্দটির যথেষ্ট অর্থোৎকর্ষ ঘটেছে। বর্তমানে madam অতি সম্মানসূচক সম্বোধনে ব্যবহৃত একটি বহুল প্রচলিত মর্যাদাকর শব্দ।
কাউকে হেয় করার জন্য নয়, প্রকৃত বিষয় জ্ঞাপনই পোস্টটির উদ্দেশ্য, তবু কেউ আহত হয়ে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী।

Wednesday 11 March 2015

ড. মোহাম্মদ আমীনের রঙ্গরসে বাংলা বানান/ হায়াৎ মামুদ

ড. মোহাম্মদ আমীনের রঙ্গরসে বাংলা বানান

হায়াৎ মামুদ

বাংলা আমাদের মাতৃভাষা ও রাষ্ট্রভাষা, একইসঙ্গে দুটোই। ১৯৫২ সালের ২১শে ও ২২শে ফেব্র“য়ারি রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে যাঁরা শহিদ হয়েছিলেন তাঁরাই কিন্তু তাঁদের অজান্তে
স্বাধীন  সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির বীজ বপন করেছিলেন। আমাদেরই উদাহরণে এখন আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বমাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ।
সবই অতি উত্তম। কিন্তু এ সবের অন্দরমহলে লুকোনো আরেকটা কথাও আছে, যা অন্যেরা জানে না। সেটি হল মাতৃভাষা ও রাষ্ট্রভাষার প্রতি আমাদের সাম্প্রতিক অবহেলা। এই দুর্লক্ষণ অনেকেরই নজর এড়ায় নি, এবং তাঁরাই এগিয়ে আসছেন এর প্রতিকারকল্পে কিছু একটা করার জন্যে।

বাক্প্রত্যঙ্গ সক্রিয় থাকলে সব মানুষই কথা বলে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করে থাকে, তা যে-ভাষাতেই হোক-না কেন। অথচ ‘ভাষা’ বিষয়টি আদৌ সহজ কোনো ব্যাপার নয়। তাকে শিখতে হয় অনেক কষ্ট করে। বলা-কওয়া, লেখালেখি, ভাষণ দেওয়া-কত কিছুই না। সবই আয়াসনির্ভর ও আয়ত্তসাপেক্ষ। সে কারণেই নির্ভূল লেখার জন্যে সব ভাষাতেই কত অসংখ্য ধরনের বইপত্তর।
 নিজের মা ও মাতৃভাষা সমার্থক। এমন কথা অনেক আগে থেকেই বহু মনস্বী ব্যক্তি উচ্চারণ করে আসছেন। কথাটি খাঁটি সত্য, কিন্তু এই সত্যকে উপলব্ধি করার জন্য নিষ্ঠা আবেগ অনুভূতি ইত্যাদি বহুকিছুর প্রয়োজন, এবং সেইসঙ্গে দরকার নিরন্তর চর্চা- বলার ও লেখার।
‘রঙ্গরসে বাংলা বানান’ যে অন্তর্গত প্রেরণা থেকে ড. মোহাম্মদ আমীন লিখতে উদ্ধুদ্ধ হলেন তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। এ-বই মাতৃভাষাপ্রেমী সকল বাঙালির প্রয়োজন মেটাবে, তাতে আমার কোনো সন্দেহ নেই। বইটির বহুল প্রচার কামনা করি। হাওলাদার প্রকাশনীকেও ধন্যবাদ তাঁরা এই গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বলে।

Saturday 7 March 2015

চকরিয়ার ইতিহাস/ ড.আনোয়ারুল কবীর।

কক্সবাজার জেলার ‘চকরিয়া’ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী উপজেলা। আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ড, জন-বৈচিত্র্য, প্রাকৃতিক শোভা
প্রভৃতি বিবেচনায় এ রকম অনিন্দ্য উপজেলার সংখ্যা বাংলাদেশে খুব একটা বেশি নেই। তবু এ উপজেলার ইতিহাস রচিত হয়নি দীর্ঘ কয়েক হাজার বছরেও।
 ড. মোহাম্মদ আমীন চকরিয়ার উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে যোগদানের পর চকরিয়ার ইতিহাস লিখতে শুরু করেন। কঠোর পরিশ্রম ও মেধার সমন্বয় ঘটিয়ে তিনি রচনা করেন চকরিয়ার উপজেলার প্রথম ইতিহাস। কেউ স্বীকার করুন বা না-করুন, গ্রন্থটি রচনা করে ড. মোহাম্মদ আমীন ঐতিহ্যবাহী চকরিয়ার ইতিহাসে  ইতিহাস হয়ে রয়ে যাবেন আযুগ।

এটি শুধু ইতিহাস নয়, অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি, নৃতত্ত্ব, ধর্ম, বিজ্ঞান, সাহিত্য, ভুগোল, জনমিতি প্রভৃতির তথ্যবহুল বিবরণে ঋদ্ধ একটি অনবদ্য গ্রন্থ। কী নেই এখানে? ইতিহাস কত প্রাণবন্ত হতে পারে, হতে পারে কত জীবন্ত এবং সাবলীল তা এ গ্রন্থটি না পড়লে অনুধাবন করা যাবে না। চকরিয়াবাসী না-হয়েও চকরিয়াবাসীকে তিনি এমন একটি অমূল্য ইতিহাস উপহার দিয়ে গিয়েছেন চকরিয়াবাসী তাঁর এ ঋণ কখনও শোধ করতে পারবেন না। তিনি এ ইতিহাসের মাধ্যমে বেঁচে থাকবেন চকরিয়ার মতো অনাদিকাল।

ড. মোহাম্মদ আমীনের চকরিয়ার ইতিহাস : একটি আকর গ্রন্থ

 ‘চকরিয়া’ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী উপজেলা। এটি কক্সবাজার জেলার প্রবেশদ্বার হিসাবে খ্যাত। আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ড, জন-বৈচিত্র্য, প্রাকৃতিক শোভা, ভৌগলিক গুরুত্ব প্রভৃতি বিবেচনায় এটি বাংলাদেশের একটি অন্যতম জনপদ।  আমি কখনও এ উপজেলায় যায়নি, তবে কক্সবাজার যাওয়ার পথে ভালভাবে চকরিয়াকে অবলোকন করেছি। আমীন আমার জুনিয়র সহকর্মী, বয়সে অনেক ছোট। তার লেখা বেশ কয়েকটা ব্ই পড়ে তার মেধা সম্পর্কে পুলকিত হয়েছি। তিনি কথাসাহিত্য, বাংলা বানান, গবেষণা, আইন ও আত্মজীবনী রচনায় দক্ষ। পরে জানতে পারি ইতিহাস রচনাতেও রয়েছে তার বিশেষ অর্ন্তদৃষ্টি ও সক্ষমতা। তিনি বাংলাদেশে বহু এলাকার ইতিহাস রচনা করেছেন। আমীনের লেখা অভয়নগরের ইতিহাস একটি প্রশংসনীয় গবেষণাকর্ম। ইতোপূর্বে ওই জেলা নিয়ে কেউ ইতিহাস রচনা করেননি। চকরিয়া নিয়েও একই কথা বলা চলে। চকরিয়ার বাংলাদেশের অতি প্রাচীন একটি জনপদ। তবু এর কোনো ইতিহাস রচিত হয়নি দীর্ঘ কয়েক হাজার বছরেও। 
ড. মোহাম্মদ আমীন চকরিয়া উপজেলায় ‘উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট’ হিসাবে যোগদানের পর চকরিয়ার ইতিহাস লিখতে শুরু করেন। কঠোর পরিশ্রম ও মেধার সমন্বয় ঘটিয়ে তিনি রচনা করেন চকরিয়ার উপজেলার প্রথম ইতিহাস। কেউ স্বীকার করুন বা না-করুন, গ্রন্থটি রচনা করে ড. আমীন ঐতিহ্যবাহী চকরিয়ার ইতিহাসে শুধু  ব্যক্তি হিসাবে নয়, কালজয়ী ইতিহাস হয়ে রয়ে যাবেন যুগের পর যুগ।
এটি শুধু ইতিহাস নয়, অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি, নৃতত্ত্ব, ধর্ম, বিজ্ঞান, সাহিত্য, ভুগোল, জনমিতি প্রভৃতি বিষয়ে তথ্যবহুল বিবরণ রয়েছে। যা সাধারণত ইতিহাস গ্রন্থে এত বিস্তৃতভাবে লেখা হয়না। এ বিবেচনায় আমীনের লেখা ‘চকরিয়ার ইতিহাস’ তথ্যবহুল বর্ণনায় সমৃদ্ধ একটি অনবদ্য গ্রন্থ। ইতিহাস কত প্রাণবন্ত হতে পারে, হতে পারে কত জীবন্ত এবং সাবলীল তা এ গ্রন্থটি না পড়লে অনুধাবন করা যাবে না। প্রতিটি তথ্যের রয়েছে যুক্তি ও উপযুক্ত প্রমাণক এবং সম্পর্কিত প্রাচীন ইতিহাস ও ঘটনাকে সমর্থন করে। ইতিহাসটি সম্পর্কে আলোচনা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ও ইতিহাসবেত্তা ড. আবদুল করিম এ ইতিহাস গ্রন্থটিকে নির্ভরযোগ্য এবং অসাধারণ একটি রচনা হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন।প্রশাসনের গুরুদায়িত্ব পালনের পাশাপাশি এমন একটি অমূল্য ইতিহাস উপহার দিয়ে ড. মোহাম্মদ আমীন চকরিয়াবাসীকে কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করে গিয়েছেন। তবে চকরিয়াবাসী তাকে কিছুই দেননি। শুনেছি, বরং বইয়ের কিছু সত্যভাষণের জন্য তাঁকে পরোক্ষভাবে অপদস্থ হতে হয়েছে। ইতিহাস অতি নিষ্ঠুর, যা ঘটে তা নিয়ে ইতিহাস হয়। তাই ইতিহাস রচয়িতাকে সত্য বর্ণনার জন্য যদি সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়, তাহলে গ্রন্থের গ্রহণযোগ্যতা বরং আরও বেড়ে যায়। আসলে, এদেশে সত্যিকার গুণীর কদর নেই বলে গুণী জন্মায় না, বিকশিত হয় না।
‘চকরিয়ার ইতিহাস’ গ্রন্থটি ছয়ত্রিশ অধ্যায়ে পরিব্যাপ্ত। এখানে  চকরিয়ার প্রাচীনত্ব, জনতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ; আয়তন, অবস্থান ও প্রশাসনিক কাঠামো; চকরিয়ার নামকরণ, ইউনিয়ন ও গ্রামসমূহের নামকরণ, চকরিয়ার প্রাগৈতিহাসিক যুগের ইতিহাস, সামন্ত শাসন, চন্দ্র ও দেব বংশের আমলে চকরিয়া, ভেসালি রাজ্য ও মুসলিম অভিযান, চকরিয়ায় মুসলমানদের আগমন, সুলতানি আমল, আফগান আমল, চকরিয়ায় শাহ শুজা, আরাকানি আমল,  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে চকরিয়া, ব্রিটিশ আমল, মুক্তিযুদ্ধ ও চকরিয়া, চকরিয়ার পার্লামেন্ট প্রতিনিধি, ঐতিহ্যময় চকরিয়া, চকরিয়ার ঐতিহ্য ও কৃষ্টি, চকরিয়ার সুন্দরবন, ইসলামি ও আধুনিক শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া, সাংবাদিক, সংবাদপত্র ও প্রকাশনা, ধর্ম ও ধর্মীয় উৎসব, ধর্ম ও ধর্মীয় বিকাশ, রাখাইন ভাষা ও সাহিত্যাঙ্গন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান, জাতীয় উন্নয়নে চকরিয়ার ভূমিকা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, লবণ ও হিমায়িত মাছ, চকরিয়ার বাইরে চকরিয়া, একনজরে চকরিয়া প্রভৃতি বিবরণ  বিশ্বাসযোগ্য তথ্যসহ চমৎকার ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে। আমি মনে করি, ড. আমীনের লেখা ‘চকরিয়ার ইতিহাস’ গ্রন্থটি বাংলাদেশের আঞ্চলিক ইতিহাসের একটি অনবদ্য সংযোজন। গবেষকদের কাছে এটি একটি আকর গ্রন্থ হিসাবে বিবেচিত হবে।
চকরিয়া ও কক্সবাজারবাসী ছাড়াও এ দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে আগ্রহী সবার কাছে বইটি একটি অমূল্য সংগ্রহ হিসাবে বিবেচিত হবে। আমি এমন একটি ইতিহাস রচনার জন্য আমীনকে সাধুবাদ জানাই। চকরিয়াবাসীর উচিত ‘চকরিয়ার ইতিহাস’ গ্রন্থের রচয়িতাকে সম্মানিত করে তাঁদের উদারতাকে আরও মহীয়ান করে তোলা।

 লেখক : আবদুস শাকুর